ভূমিকা
গম চাষের সহজ উপায় বাংলাদেশের প্রধান শীতকালীন ফসলের মধ্যে অন্যতম। সঠিক পরিকল্পনা ও পরিচর্যা ব্যবহার করলে গম চাষ লাভজনক হতে পারে। নতুন কৃষক ও ছোট খামারিরা সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে ভালো উৎপাদন পেতে পারেন।
বাংলাদেশে গম চাষের সহজ উপায়
১. সঠিক জমি নির্বাচন
- উঁচু, নিকাশন সুগম, উর্বর মাটি গম চাষের জন্য উপযুক্ত।
- দোআঁশ বা হালকা বেলে মাটিতে ভালো ফলন হয়।
- pH ৬–৭-এর মধ্যে মাটি নির্বাচন করুন।
২. সঠিক জাত নির্বাচন
- উচ্চ ফলনশীল ও রোগপ্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
- উদাহরণ: BARI Gom 26, BARI Gom 27।
- শুষ্ক ও আর্দ্র উভয় মাটিতে উপযুক্ত জাত বেছে নিন।
৩. জমি প্রস্তুতি
- জমি ভালোভাবে চাষ করুন, ঝুরঝুরে ও মসৃণ করে বীজ বপনের জন্য প্রস্তুত করুন।
- প্রতি বিঘায় ৮–১০ টন জৈব সার বা গোবর মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করুন।
৪. বীজ বপন
- নভেম্বর–ডিসেম্বর মাসে বপন করুন।
- প্রতি বিঘায় ৫–৭ কেজি বীজ ব্যবহার করুন।
- সারি দূরত্ব ২০–২৫ সেমি এবং বীজের দূরত্ব ৫–৭ সেমি।
৫. সেচ ও পরিচর্যা
- বপনের পর প্রাথমিক সেচ দিন।
- ফুল আসার সময় পর্যাপ্ত পানি দিন, তবে জলাবদ্ধতা থেকে দূরে রাখুন।
- নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করুন।
৬. সার প্রয়োগ
- ইউরিয়া: ৫০ কেজি, টিএসপি: ২০–২৫ কেজি, এমওপি: ২০–২৫ কেজি প্রতি একরে।
- প্রয়োজনে বোরাক্স ৫ কেজি ব্যবহার করুন।
৭. রোগ ও কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ
- গমের প্রধান রোগ: ছত্রাকজনিত রোগ, কালো দাগ।
- রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার এবং প্রয়োজনে কীটনাশক স্প্রে করুন।
৮. ফসল তোলা
- বপনের ৯০–১২০ দিনের মধ্যে গম কাটা যায়।
- শুকিয়ে গেলে আলাদা করে রাখুন।
- খোসা বা বীজ পরিষ্কার করে সংরক্ষণ করুন।
উপসংহার
বাংলাদেশে গম চাষ সহজ ও লাভজনক করা সম্ভব যদি উন্নত জাত, সঠিক জমি, বীজ বপন, সেচ, সার প্রয়োগ এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা হয়। সঠিক পরিচর্যা ও নিয়মিত নজরদারি ফসলের মান ও উৎপাদন বৃদ্ধি করে।