ফসল উৎপাদনে জৈব সার ব্যবহার

ভূমিকা

বাংলাদেশে ফসল উৎপাদনে জৈব সার ব্যবহার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জৈব সার মাটির উর্বরতা বাড়ায়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পরিবেশ বান্ধব। রাসায়নিক সার কমিয়ে স্বাস্থ্যকর ও টেকসই কৃষি চাষ করা সম্ভব।

জৈব সার ব্যবহার করার সুবিধা

১. মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি

  • গোবর, কম্পোস্ট ও পচা খড়ের মতো জৈব সার মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে।
  • মাটিতে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে, ফলে ফসল দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

  • জৈব সার মাটিতে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া ও ক্ষুদ্রজীব তৈরি করে।
  • রোগ ও পোকামাকড় কমায়, যা ফসলের ক্ষতি রোধ করে।

৩. পরিবেশবান্ধব

  • রাসায়নিক সার ব্যবহার কমে, ফলে মাটির ক্ষয় ও পরিবেশ দূষণ কমে।
  • পানির মানও ভালো থাকে।

৪. দীর্ঘমেয়াদে খরচ সাশ্রয়

  • প্রাথমিকভাবে জৈব সার কিছুটা ব্যয়বহুল মনে হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে মাটি সুস্থ রাখে।
  • ফসলের পুনরাবৃত্তি উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, তাই খরচ কম হয়।

ফসল উৎপাদনে জৈব সার ব্যবহার কৌশল

১. গোবর বা কম্পোস্ট ব্যবহার

  • প্রতি বিঘায় ৮–১০ টন গোবর মিশিয়ে জমি প্রস্তুত করুন।
  • পচানো বা হালকা গন্ধহীন গোবর ভালো।

২. বীজ বপনের সময়

  • বীজের চারপাশে জৈব সার মিশানো যায়।
  • এটি বীজ অঙ্কুরণ শক্তি বাড়ায়।

৩. ফসলের বৃদ্ধির সময়

  • মধ্যম ও ফুল আসার সময় ছোট পরিমাণ জৈব সার প্রয়োগ করলে ফলন বাড়ে।
  • তরল জৈব সার (Vermicompost Tea) স্প্রে করা যায়।

৪. অন্যান্য উপকরণ

  • নেপাথ্য, পচা খড়, লেবুর খোসা, মাটির পানি ব্যবহার করে মাটি পুষ্টিকর করা যায়।
  • ফসলের ধরন অনুযায়ী জৈব সার নির্বাচন করুন।

উপসংহার

ফসল উৎপাদনে জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ, পরিবেশবান্ধব চাষ এবং দীর্ঘমেয়াদী খরচ সাশ্রয় সম্ভব। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যকর ও লাভজনক কৃষি চাষের জন্য জৈব সার একটি অপরিহার্য উপকরণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart
Scroll to Top